Quantcast
Channel: QuranerAlo.com – কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট
Viewing all 385 articles
Browse latest View live

মানুষ কষ্ট দিলে মনের ক্ষত সারাবেন যেভাবে

0
0

colorful-flowers-wallpaper_422_84115

মূল প্রবন্ধ : ইয়াসমিন মোজাহেদ | ভাষান্তর : মোঃ মুনিমুল হক |  সম্পাদনা : আব্‌দ আল-আহাদ

যখন ছোট ছিলাম, পৃথিবীটাকে মনে হতো একেবারেই নির্ঝঞ্ঝাট এবং খুব পরিপাটি একটা জায়গা। কিন্তু বড় হয়ে দেখলাম ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়। ভাবতাম সবকিছুই ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ আমার মনে হতো, কারও প্রতি কখনো কোনোরূপ অন্যায় করা যাবে না। কোনো অন্যায় যদি হয়েই যায়, তাহলে সকল ক্ষেত্রেই সুবিচারের জয় হবে। নিজের এই নীতিবোধ অনুযায়ী, সবকিছু যেমনটি হওয়া উচিত তেমনটি ঠিক রাখার জন্য অনেক সংগ্রাম করেছি জীবনে। কিন্তু এই সংগ্রাম করতে গিয়ে জীবনের একটি মৌলিক সত্যকে উপেক্ষা করছিলাম আমি। আমার শিশুসুলভ আদর্শবাদের কারণে আমি বুঝতেই পারিনি, সৃষ্টিগতভাবেই এই পার্থিব জগতটা ত্রুটিযুক্ত। ঠিক যেভাবে আমরা মানুষরা সৃষ্টিগতভাবে অপূর্ণ, ত্রুটিযুক্ত। সবসময় অঘটন আর ঝামেলা লেগেই থাকে আমাদের জীবনে। এসব ঝামেলাই জড়িয়ে, জেনেই হোক, না-জেনেই হোক, ইচ্ছা কি অনিচ্ছায় হোক, অনিবার্যভাবেই আমরা মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে ফেলি। বাস্তব হলো, পৃথিবীটা সবসময় ন্যায়নীতি দিয়ে চলে না।

তার মানে কি এই যে, আমরা অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই থামিয়ে দেবো, সত্যের পক্ষে হাল ছেড়ে দেবো? অবশ্যই না। এর মানে হলো, আমরা অবশ্যই এই পৃথিবী এবং আর সবকিছুকে কোনো কাল্পনিক বা অবাস্তব মানদণ্ডে বিচার করতে যাবো না। তবে এমনটি না-করাও সহজ না। কীভাবে আমরা এতো ত্রুটিময় এই পৃথিবীতে টিকে থাকবো, যেখানে মানুষ প্রতিনিয়ত পরস্পরকে হতাশায় ডুবাচ্ছে, এমনকি নিজ পরিবারের লোকেরাই মনে আঘাত দিয়ে মনটা ভেঙ্গে দিচ্ছে? সবচেয়ে কঠিন বিষয়টি হলো, আমাদের প্রতি কেউ অন্যায় করলে কীভাবে আমরা সেই অপরাধকে ক্ষমা করতে শিখব? কীভাবে আমরা নিষ্ঠুর না হয়েও দৃঢ় হতে পারি? অথবা কীভাবে দুর্বল না হয়েও মনের কোমলতাকে বজায় রাখতে পারি? কখন আমরা কোনো কিছুকে আঁকড়ে ধরে রাখবো? আর কখন সেটিকে বন্ধন থেকে মুক্ত করে দেবো? কখন বেশি বেশি যত্ন দেখালে তা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়? কারও প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা বলে কি কোনো জিনিস আছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদেরকে প্রথমে নিজেরদের জীবনের গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের খুঁজে দেখতে হবে, আমরাই প্রথম বা শেষ কিনা, যারা কষ্ট এবং অন্যায়ের শিকার। যে মানুষগুলো আমাদের আগে পৃথিবীতে ছিল তাদের জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করতে হবে। তাদের সংগ্রাম এবং তাদের বিজয় নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে, কষ্ট ছাড়া কখনোই কোনো অগ্রগতি আসেনি এবং সাফল্যের একমাত্র পথ হলো সংগ্রাম। উপলব্ধি করতে হবে, জীবন সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো কষ্টভোগ করা এবং অন্যদের দেওয়া দুঃখকষ্ট এবং ক্ষতিকে জয় করা।

আমাদের নবীদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তসমূহ স্মরণ করলে আমরা দেখতে পাই যে, দুঃখকষ্ট ভোগ করা শুধু আমাদের জন্য কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মনে রাখবেন, নূহ (আ) তাঁর জাতির লোকদের দ্বারা ৯৫০ বছর ধরে অত্যাচারীত হয়েছিলেন। কুরআন আমাদের বলে :

“তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও অস্বীকার করেছিল। তারা আমার বান্দাকে অস্বীকার করেছিল এবং এবং বলেছিল, ‘পাগল।’ আর তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।”
[সূরা আল-কামার; ৫৪ : ৯]

নূহের (আ) উপর এত বেশী অত্যাচার করা হয়েছিল যে:

“তিনি তার পালনকর্তাকে ডেকে বললেনঃ আমি পরাভূত, অতএব, তুমি সাহায্য করো।” [আল-কামার; ৫৪ : ১০]

নবীর (সা) কথাই মনে করে দেখুন, কীভাবে তাঁকে পাথর মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। কীভাবে তাঁর সাহাবীদের প্রহার করা হয়েছিল। কীভাবে তারা অনাহারে দিন পার করেছিলেন। অন্য মানুষরাই তাদেরকে এভাবে কষ্ট দিয়েছিল। এমনকি আমরা অস্তিত্বে আসার পূর্বেই ফেরেশতারা মানুষের এই ধরণের চারিত্রিক দিকটি বুঝতে পেরেছিল। আল্লাহ্‌ যখন বললেন যে, তিনি মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন, তখন ফেরেশতারা প্রথম যে প্রশ্নটি করেছিল তা ছিল মানুষের ক্ষতিকর সম্ভাবনা সম্পর্কে। আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন :

“আর স্মরণ করুন, যখন আপনার রব ফেরেশতাদের বললেন : ‘নিশ্চয়ই আমি যমিনে একজন খলিফা সৃষ্টি করছি’, তারা বলল, আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে তাতে ফাসাদ করবে এবং রক্ত প্রবাহিত করবে? আর আমরা তো আপনার প্রশংসায় তাসবীহ্‌ পাঠ করছি এবং আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই আমি জানি যা তোমরা জানো না।’ ” [আল-বাকারাহ্‌; ২ : ৩০]

মানুষ জাতির একে অপরের বিরুদ্ধে ঘৃণিত অপরাধ সংঘটনের এই প্রবণতা একটি দুঃখজনক বাস্তবতা। তবে আমাদের অনেকেই অনেক সৌভাগ্যবান। আমাদের অধিকাংশকেই কখনো এমন কোনো দুঃখকষ্টের শিকার হতে হয়নি অন্যরা প্রতিনিয়তই যার শিকার হচ্ছে। আমাদেরকে অনেককেই কোনোদিন নিজের চোখে দেখতে হবে না যে, আমাদের পরিবার পরিজনের কাউকে নির্যাতন করে খুন করা হচ্ছে। তারপরও এমন মানুষ খুব কমই আছে, যারা বলতে পারে, তারা কোনোদিনও কোনোভাবে অন্য কারও দ্বারা কষ্ট পায়নি। সুতরাং, যদিও আমাদের অনেকেই কোনোদিন জানবে না অনাহারে ক্ষুধার যন্ত্রণায় মরার কষ্টটা কী; নিজের চোখের সামনে নিজের বাড়িঘর ধ্বংস করতে দেখার অনুভূতিটা কেমন, তথাপি আমার অনেকেই জানি আহত হৃদয়ের কান্নার অনুভূতিটা কেমন।

আচ্ছা, এসব কি এড়ানো সম্ভব? আমার মনে হয়, কিছুটা হলেও সম্ভব। আমরা কখনোই সকল দুঃখকষ্টকে এড়াতে পারব না। তবে আমদের প্রত্যাশা, আমাদের প্রতিক্রিয়া এবং আমাদের মনোযোগকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে অনেক ধ্বংসযজ্ঞই এড়ানো সম্ভব।

উদাহারনস্বরূপ বলা যায়, আমদের আশা, ভরসা, বিশ্বাস — সবকিছুকে অন্য একজন মানুষের উপর সমর্পণ করাটা একেবারেই অবস্তবিক এবং ডাহা বোকামি। আমদের মনে রাখতে হবে, ভুল করা মানুষের সৃষ্টিগত স্বভাব। তাই আমাদের চূড়ান্ত বিশ্বাস, আস্থা, এবং প্রত্যাশা শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র প্রতি সমর্পণ করা উচিত। আল্লাহ্‌ বলেন :

“যে ব্যক্তি তাগূতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞ।” [আল-বাকারাহ্‌; ২ : ২৫৬]

“আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান এমন মজবুত এক রশি যা ছিন্ন হবার নয়।” — শুধু এই কথাটি যদি আমরা স্মরণে রাখি, তাহলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

একথা বলার অর্থ কিন্তু এই নয় যে, আমরা ভালোবাসবো না বা ভালোবাসলেও কম করে বাসবো। তবে কীভাবে ভালোবাসবো সেটাই হলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকেই বা কোনো কিছুকেই সর্বোচ্চ ভালোবাসা যাবে না। অন্তরে আল্লাহ্‌ ব্যতীত আর কোনো কিছুকেই অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। আর আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোনো কিছুকেই এত বেশী ভালোবাসা যাবে না যাতে করে ওই বস্তু ছাড়া জীবন চলা আমাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ধরনের “ভালোবাসা” ভালোবাসাই নয়। এটা এক ধরনের পূজা করা। এই ভালোবাসায় কষ্ট ছাড়া আর কিছু নেই।

তারপরও যদি কেউ এমন করে ভালোবাসে এবং অন্যের দ্বারা আঘাত বা কষ্ট পায়, তাহলে অনিবার্য পরিণতিটা কী দাঁড়ায়? সবচেয়ে কঠিন কাজটা আমরা কীভাবে করতে পারি? কীভাবে আমরা অন্যকে ক্ষমা করতে শিখব? কীভাবে মনের ক্ষতগুলোকে সারিয়ে তুলে, তাদের সাথে সদাচরণ বজায় রাখব যারা নিজেরাই আমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে না?

আবূ বাক্‌র (রা) এর ঘটনাটি ঠিক এমন পরিস্থিতির একটি চমৎকার উদাহরণ। যখন তাঁর মেয়ে, ‘আয়েশা (রা) সম্পর্কে জঘন্যতম অপবাদ রটানো হলো, তিনি জানতে পারলেন, এই অপবাদটা রটিয়েছিল মিস্‌তাহ্‌ নামে তারই এক চাচাতো ভাই যাকে তিনি বহুদিন ধরে আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছিলেন। সঙ্গত কারণেই আবূ বাক্‌র অপবাদ আরোপকারীর সাহায্য বন্ধ করে দিলেন। সামান্য সময় পরেই আল্লাহ্‌ নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করলেন :

“আর তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন এমন কসম না করে যে, তারা নিকটাত্মীয়দের, মিসকীনদের ও আল্লাহ্‌র পথে হিজরতকারীদেরকে কিছুই দেবে না। আর তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি কামনা করো না যে, আল্লাহ্‌ তোমাদের ক্ষমা করে দেন? আর আল্লাহ্‌ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [আন-নূর; ২৪:২২]

এই আয়াত শুনেই আবূ বাক্‌র (রা) বুঝতে পারলেন যে, তিনি নিজেই আল্লাহ্‌র ক্ষমা চান। তাই তিনি শুধু সেই লোককে সাহায্য দেওয়া চালুই করলেন না, এখন আগের চেয়ে বেশি করে দিতে লাগলেন।

মু’মিন হওয়ার মূলেই হলো এইভাবে ক্ষমা করে দেওয়া। এই ধরণের মু’মিনদের বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ্‌ বলেন :

“আর যারা গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন রাগান্বিত হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়।” [আশ-শূরা; ৪২:৩৭]

‘আমি নিজেও  ভুল করি, অন্যদের কষ্ট দেয়’ — নিজের সম্পর্কে এই ধরণের সচেতনতা বোধ দ্বারা অন্যকে তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষমা করে দেওয়ার ক্ষমতাটা উদ্বুদ্ধ হওয়া উচিত। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই বিষয়টির মাধ্যমেই আমাদের বিনম্রতা উজ্জীবিত হওয়া উচিত যে, আমারা প্রতিদিন পাপ করার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র প্রতি অন্যায় করছি। আল্লাহ্‌র সাথে তুলনা করলে মানুষ তো কিছুই না। তারপরও বিশ্বজগতের প্রতিপালক, আল্লাহ্‌ আমাদের প্রতিনিয়ত ক্ষমা করে দিচ্ছেন। তাহলে ক্ষমা না করে মানুষকে বেঁধে রাখার আমরা কে? নিজেরা যদি আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশা করি, তাহলে আমরা অন্যদেরকে ক্ষমা করতে পারি না কেন? আর এ কারণেই নবী (সা) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন :

“যারা অন্যের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহ্‌ও তাদের প্রতি দয়া করবেন না।” [মুসলিম; অধ্যায় ৩০, হাদীস নং ৫৭৩৭]

আল্লাহ্‌র দয়া লাভের আশা যেন আমাদের অন্যদের প্রতি দয়া করতে উদ্বুদ্ধ করে এবং একদিন সেই দুনিয়ার নিয়ে যায় যা বাস্তবিক অর্থেই নিখুঁত, ত্রুটিহীন, পরিপূর্ণ, অনুপম, অতুলনীয়।


আপনার সন্তান থেকে আপনি কী চান?

0
0

125098-christmas-gift

লেখকঃ আহমেদ রফিক

গাজিপুর থেকে ঢাকা ফিরছিলাম। বাসে উঠে বসলাম। কিছুক্ষন পর এক মুরব্বী উঠে আমার পাশেই বসলেন। আমি সালাম দিলাম। স্নিগ্ধ কোমল চেহারা। শ্বেত-শুভ্র লম্বা দাড়ি। দেখলেই শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছা করে। বয়সের ভারে বেশ ন্যুজ বোঝা যায়। যেন জোর করেই লুকোনোর চেষ্টা। কালো প্যান্ট সাদা শার্ট পরা। ইন করা। হাতে একটি এক্সিকিউটিভ ফাইল। কাগজ-পত্র ভরা।

কিছুক্ষন পর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা আপনার নাম? নাম বললাম। জিজ্ঞেস করলেন কী করেন? সংক্ষেপে বললাম। জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় থাকেন। বললাম। জানতে চাইলেন বাসায় কে কে আছে।

বললাম, আলহামদু লিল্লাহ সবাই আছে। বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে।

প্রশ্ন করলেন, ছেলে মেয়ে ক’টা? বললাম, আলহামদু লিল্লাহ আমার মোট ছয় ছেলে-মেয়ে। চারটা ছোট, আর দু’জন বড়।

মনে হয় তিনি পুরো কথাটা ধরতে পারেননি। বললেন, কী বলছেন?

বললাম, হ্যা চাচা, আমার নিজের চার ছেলে-মেয়ে। দুই মেয়ে, দুই ছেলে। আর বুড়ো দুই সন্তান হলেন আমার বাবা মা।

জিজ্ঞেস করলেন, বাবা মা কি আপনার সাথেই থাকেন?

বললাম, সব সময় থাকেন না। মানুষের ভীড়ে ঢাকা শহরে বাবার না কি দম বন্ধ হয়ে আসে। উনি গ্রামেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তাই বাবা মা গ্রামেই থাকেন। কিন্তু নাতীদের টানে আবার গ্রামেও তাদের মন টেকে না। তাই এখন এখানেই আছেন। সারাক্ষন নাতী-নাতনীদের নিয়ে থাকেন। দেখছি, এখানেই ওনারা বেশ আনন্দে আছেন আলহামদু লিল্লাহ। তাই আমিও ওনাদেরকে আর গ্রামে যেতে দিতে চাই না। মাঝে-মধ্যে গ্রামের বাড়িঘর, জায়গা-জমি দেখা শোনার জন্য গিয়ে কিছু দিন থেকে আবার চলে আসবেন।

বললাম, চাচা আপনি আমার বাবার চেয়েও বয়সে অনেক বড় হবেন মনে হয়। আমাকে তুমি করে বলেন। আপনার মুখে ‘আপনি’ করে শুনতে আমার আন-ইজি লাগছে।

বললেন, আচ্ছা আচ্ছা, থ্যাংক ইউ।

কথা বলতে বেশ ভালোই লাগছিলো ভদ্রলোকের সাথে। দেখলাম, উনি আর কিছু জিজ্ঞেস করছেন না। অগত্যা আমিই জানতে চাইলাম ওনার কথা। কী করেন, ছেলে-মেয়ে ক’টা, কী করে ইত্যাদি।

ছেলে-মেয়েদের কথা বললেন। বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, অ্যামেরিকাতে থাকে। মেঝ ছেলে এই দেশেরই একজন উপ-সচিব। এর পর তার আরেকটি মেয়েও আছে। সে যুক্তরাজ্যে স্বামীর সাথে থাকে; সেখানকার নাম করা একটি কলেজের শিক্ষক। তিনি নিজে একটি সি.এ ফার্মে অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে কাজ করেন।

এরপর কিছুক্ষন নিরবে কেটে গেলো। আমি মনে হয় অন্য কিছু চিন্তা করছিলাম, না যেন ফোনে কথা বলছিলাম।
হঠাৎ ফিরে দেখলাম ভদ্রলোক চোখ মুছছেন। পানি বেয়ে পড়ছে গণ্ড বেয়ে। আমি ভাবলাম, শরীরে কোনো আঘাত-টাঘাত পেয়েছেন হয়তো। বললাম, চাচা কী হয়েছে? বললেন, কিছু না বাবা।

আমি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। কী করবো, কী বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। বললাম, চাচা কিছু মনে না করলে আমাকে বলুন কী হয়েছে? কিছুক্ষণ হাতের রুমালে চোখ চেপে রেখে, কী হয়েছে সেটা না বলে তিনি বললেন, ‘তোমার বাবা-মা সত্যিই সৌভাগ্যবান’।

বললাম, আলহামদু লিল্লাহ। দোয়া করবেন, যেন আজীবন ওনাদের খিদমত করে যেতে পারি।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, চাচা আপনার এই বয়সে এভাবে বাসে দৌড়-ঝাপ করে চলাফেরা করতে কষ্ট হয় না? কেনই বা করেন? আপনার ছেলে-মেয়েরা তো সব সুপ্রতিষ্ঠিত, স্বচ্ছল!

বললেন, কষ্ট তো হয়ই বাবা, কিন্তু না করেও তো উপায় নেই!

বললাম, কেন, আপনার সন্তানরা…?

বললেন, তাদের সময় নেই খোজ খবর নেওয়ার। তারা তাদের নিজেদের জীবন-ক্যারিয়ার নিয়ে এতো ব্যাস্ত যে সময়ই পায় না। টাকা-পয়সাও পাঠায় না। আমার তো স্ত্রী আছে। আমার ও তার জীবনধারণের জন্য হলেও আমাকে এই বয়সে চাকুরি করতে হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা বলে, আমি বসে থাকলে নাকি অসুস্থ অচল হয়ে পড়বো, ডায়াবেটিক প্রেসারে আক্রান্ত হবো। অতএব আমার খেটে খাওয়া উচিৎ।

আমি যেন বোবা হয়ে গেলাম। শান্তনা দেওয়ার কোনো ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না। শুধু তাকিয়ে রইলাম কতোক্ষণ। অসহায়ের মতো। ভাবছিলাম এই আধুনিক বস্তুবাদী সেক্যুলার সমাজব্যবস্থার কথা। এখান থেকে কী তৈরি হচ্ছে! এতো মানুষকে জন্তু জানোয়ার বানানোর কারখানা হয়ে দাড়িয়েছে! কোথায় যাচ্ছি আমরা! কিসের পেছনে ছুটে চলছি। কোথায় হারিয়ে গেলো আমাদের শান্তির সুখ পাখিটি? কোথায়? কে দায়ভার নেবে এই অসহায় বৃদ্ধার? কে তাকে শান্তনা দেবে? কে রুমালটা এগিয়ে দেবে অন্তত, তার চোখের জলটুকু মোছার?

বললাম, চাচা দোয়া করেন ছেলে-মেয়েদের জন্য, আল্লাহ ওদেরকে সঠিক বুঝ দান করবেন। চাচা বললেন, দোয়া তো করি, কিন্তু দোয়া তো কবুল হচ্ছে না…।. বললাম চাচা দোয়া করতে থাকেন। দোয়া আল্লাহ নিশ্চয়ই কবুল করেন; যদি তা সঠিকভাবে হয়। এই দেখুন, আমার বাবাকে আমি ছোট সময় থেকে দেখেছি, তিনি আল্লাহর কাছে কেবল একটিই দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার সন্তানকে খাটি মুসলিম বানাও, দ্বীনদার বানাও। আমি কতোটুকু দ্বীনদার খাটি মুসলিম হতে পেরেছি তা জানি না। ভুল-ত্রুটি, গুনাহ খাতা তো হর হামেশাই করে ফেলি। কিন্তু বাবা-মায়ের খেদমত করার চেষ্টা করি আপ্রান। এটা শুধু বাবা-মা’র সন্তুষ্টির জন্যই যে করি—তা নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি মুলত। কারণ আমার দ্বীন, আমার ইসলাম আমাকে এটা শিখিয়েছে চাচা। আমার দ্বীনই আমাকে শিখিয়েছে যে, বাবা মা যে সন্তানের উপর সন্তুষ্ট নয় আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট নন।

দেখুন চাচা, আমার বাবা অনেক পয়সাওয়ালা মানুষ ছিলেন না। অনেক আবদারই অনেক সময় পুরণ করতে পারেন নি। তথাকথিত নামি-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও লেখা-পড়া করাতে পারেননি হয়তো। সামর্থ্যে যতোটুকু ছিলো চেষ্টা করেছেন। আমি হয়তো অ্যামেরিকান কোনো ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হয়নি, অন্তত বাবা-মা’র চক্ষু-শীতলকারী সন্তান হতে পেরেছি, আলহামদু লিল্লাহ। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন আজীবন ওনাদের চক্ষু শীতলকারী হয়ে থাকতে পারি।

চাচা অপলক তাকিয়ে আছেন। বললাম, চাচা, আপনার দোয়াও নিশ্চয়ই কবুল হয়েছে। আপনি মনে করুন তো, আপনার সেই তরুণ বয়সের কথা। যখন আপনার সন্তানগুলো জন্মগ্রহণ করেছিলো। আপনি তাদের লেখা-পড়া, ভবিষ্যত নিয়ে কতো চিন্তিতো ছিলেন! কতো উদ্বিগ্ন! দোয়া কি করতেন না তখন? অবশ্যই করতেন। মনে করুন তো কী দোয়া করতেন?

চাচা বললেন, হ্যা বাবা! দোয়া করতাম তারা যেন বড় হয়, শিক্ষিত হয়। সমাজে আমার মুখ উজ্জ্বল করে। সম্মানজনক জীবন যাপন করতে পারে…।

বললাম, চাচা দেখেন, আপনার দোয়া কিন্তু কবুল হয়েছে! আপনি যা চেয়েছিলেন তা কিন্তু হয়েছে। তারা বড় শিক্ষিত হয়েছে, সমাজে আপনার মুখও উজ্জ্বল করেছে। ভালো করে মনে করে দেখেন চাচা, আপনার সন্তানদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে কিন্তু আপনি গুরুত্ব দেননি। তাদেরকে মহান স্রষ্টা আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াকে গুরুত্ব দেননি। কখনো হাত তুলে এই বলে কান্নাকাটি করেননি যে, হে আল্লাহ! তুমি আমার সন্তানদেরকে ভালো দ্বীনদার বানাও, ভালো মুসলিম বানাও, ঈমানদার বানাও। কখনো বলেননি, রব্বানা, হাব লানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়াজ ‘আলনা লিল মুত্তাকীনা ইমামা।

চাচা দেখুন, আমরা যারা পিতা-মাতা, আমরা কিন্তু দাতা নই, আয়োজক মাত্র। আমরা আমাদের সন্তানদেরকে খাদ্য-খাবার, পোষাক আশাক যা কিছুই দেই না কেন, আমরা কিন্তু নিছক ব্যবস্থাপক। মুল দাতা হলেন মহান দয়ালু ও রিজিকদাতা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা। আমরা যদি মুল মালিকের প্রতি তাদেরকে কৃতজ্ঞ হতে না শিখাই, তাহলে কিভাবে আশা করতে পারি যে, তারা আমাদের প্রতি শেষ পর্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকবে?

চাচা এই যে বৃদ্ধ বাবা-মা’র যত্ন না নেওয়া এটা কি মানবতার জন্য একটি বিপর্যয় নয়?

চাচা বললেন, এটা শুধু বিপর্যয় নয়, মহা বিপর্যয়। এটা মানুষত্যের মর্যাদা থেকে মানুষের পশুর পর্যায়ে নেমে যাওয়ার নামান্তর।

এই অসভ্যতা কোত্থেকে আমাদের মুসলিম সমাজে এসেছে জানেন চাচা? এসেছে বস্তুবাদীতা থেকে, পশ্চিমা অসভ্যতা থেকে। মুসলিম দেশে কখনো কোনো মানুষ পালার খোয়াড় ছিলো না। আজ আমরা তাদেরকে আমাদের চরম পরম আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমাদের দেশেও এখন এই খোয়াড় ব্যবস্থা এসেছে। গুড়োদের খোয়াড়, বুড়োদের খোয়াড়। বাংলায় বললে কেমন যেন অসভ্যতা নগ্ন হয়ে ধরা পড়ে যায়। তাই আদুরে নামে এরা ইংলিশে বলে ‘ডে কেয়ার’ বা ‘ওল্ড হোম’।. শিশুকালে আপনি সন্তানকে ডে কেয়ারে রাখবেন, বুড়ো হলে তারা আপনাদেরকে ওল্ড হোমে রেখে আসবে।

দ্বীনদার না হওয়া সত্ত্বেও অনেকে হয়তো মানবিক বোধ থেকে বাবা মা’র খোজ-খবর রাখতে পারেন, দেখা-শোনা করতে পারেন। কিন্তু একজন দ্বীনদার সন্তানের কাছ থেকে বাবা সত্যি কেমন আদর-যত্ন ও সম্মান শ্রদ্ধা পেতে পারেন তা কেবল সেই বাবা-মা’রাই জানেন, যাদের দ্বীনদার সন্তান আছে।

ঢাকায় আমি আমার স্টপেজের কাছে এসে চাচার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। বললাম, চাচা আপনি মুরব্বী মানুষ, অনেক কথা বলেছি, ভুলত্রুটি মাফ করে দিয়েন। চাচার চোখ আবার ছলছল করে উঠলো। ক্ষণিকের পরিচয়ে মনে হয় অনেক আপন হয়ে পড়েছিলাম। বাস থেকে নেমেও দেখলাম, চাচা তাকিয়ে আছেন জানালা দিয়ে। আবারো হাত নাড়লাম। দোয়া করলাম, হে আল্লাহ! তুমি ভালো রেখো চাচাকে।

এ সমস্যা শুধু বাসে দেখা হওয়া এই চাচারই নয়। তিনি এই সমাজের একটি দর্পনমাত্র। আমি এমন আরো অনেক দেখেছি। আপনিও দেখেছেন নিশ্চয়ই অনেক। আপনার একই বিল্ডিং এ, পাড়ায়, মহল্লায়, আত্মিয় ও বন্ধু বান্ধবের পরিবারে। মাতাল, হিরোইন, গাজা, ডাইল সহ নানা রকম মাদকসেবী সন্তানদের ঘটনা তো অহরহ দেখবেন আপনার চারপাশে। এদের কথা না হয় বাদই দিলাম।

আমার নানা বাড়ি এলাকায় এক উকিল সাহেব ছিলেন। নাম আতাহার আলী। ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন আমেরিকায় লেখাপড়া করতে। ছেলেকে টাকা পাঠাতে পাঠাতে তিনি একরকম নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন। ওদিকে ছেলে এক সাদা মেয়েকে বিয়ে করে মৌজ মাস্তিতে ব্যাস্ত। বাবা ছেলের দুঃখে কাদতে কাদতে মারা গেছেন। বাবাকে দেখতেও আসেনি সে। অনেক দিন পর তার অ্যামেরিকান বৌ নিয়ে বেড়াতে এসেছিলো মাকে দেখতে। ঘন্টা দুয়েক গ্রামের বাড়িতে থেকে তার সাদা বৌ ক্লান্ত। স্বামীকে ধমক দিয়ে বলেছিলো, ‘ইট ইজ ঠু লেইট, লেটস গো…’

আপনি আপনার সন্তানকে ডাক্তার বানান, ইঞ্জিনিয়ার বানান, প্রফেসর বানান, বিজ্ঞানী বানান—কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সবার আগে যদি ভালো মুসলিম না বানান তাহলে প্রস্তুত থাকুন সে দিনের জন্য যেদিনের কান্নার কোনো শেষ নেই। এ কান্না অনেকের এই চাচার মতো, এই উকিল সাহেবের মতো দুনিয়াতেই শুরু হয়ে যায়। কারো ভাগ্যক্রমে দুনিয়াতে শুরু নাও হতে পারে। কারণ দুনিয়া মুলত সাধারণভাবে শাস্তির জায়গা নয়। শাস্তির জায়গা হলো আখিরাত। দুনিয়াতে কাউকে কাউকে আল্লাহ শাস্তি দিয়ে দেখান, যাতে অন্যরা শিক্ষা গ্রহণ করে। আল্লাহ তা ‘আলা বলেন,

জলেস্থলে যতো বিপর্যয়/অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে তা মানুষেরই হাতের কামাই। এর উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের কিছু ফল ভোগ করানো, যাতে তারা ফিরে আসে। [সুরা আর রূম, আয়াত ৪১]

দুনিয়াতে বেচে গেলেও আপনার এই প্রানপ্রিয় সন্তানেরা কিন্তু আখিরাতে আপনারই বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে আল্লাহর দরবারে। কেন আপনি তাদেরকে দ্বীন শিখাননি!

আপনার সন্তান, আপনারই সিদ্ধান্ত। তাদেরকে কি আপনি আপনার দুনিয়ার শান্তি ও জান্নাতের উসিলা বানাবেন, নাকি দুনিয়ার লাঞ্ছনা আর আখিরাতের শাস্তির কারণ বানাবেন। সেটা একান্তই আপনার সিদ্ধান্ত! হ্যা একান্তই আপনার!!!

দৃষ্টি সংযত রাখার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা

0
0

myosotis

ভাষান্তর : হামিদা মুবাশ্বেরা | সম্পাদনাআব্‌দ আল-আহাদ

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেছেন,

(হে নবী) আপনি  মু’মিন পুরুষদের বলুন, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের  লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয়ই তারা যা করে, সে সম্পর্কে আল্লাহ্‌  সম্যক অবহিত

(সূরা আন-নূর; ২৪ : ৩০)

অতএব, আল্লাহ্‌ পবিত্রতা ও আত্মিক উন্নয়নকে দৃষ্টি সংযত রাখার এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করার প্রতিদান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কারণ নিষিদ্ধ বস্তু থেকে নিজের দৃষ্টি সংযত করার ফলে তিনটি উপকার হয় যেগুলো ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যন্ত মূল্যবান।

প্রথমত : ঈমানের মধুরতা আস্বাদন করা

যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র ভয়ে দৃষ্টি সংযত রাখে, তার কাছে ঈমানের সুমিষ্ট মাধুর্য এবং তা থেকে পাওয়া আনন্দ, নিষিদ্ধ বস্তু দেখে পাওয়া আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি মনোহর। বস্তুত, “কেউ যদি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য কোনোকিছু পরিত্যাগ করে, তবে আল্লাহ্‌ আরও উত্তম কিছুর দ্বারা সেটির প্রতিস্থাপন করেন।”

প্রবৃত্তি হলো নিষিদ্ধকাজে প্রলুব্ধকারী এবং সুন্দর অবয়ব দেখতে ভালোবাসে। আর চোখ হলো হৃদয়ের দিশারী। হৃদয় তার দিশারীকে কোথায় কি আছে, তা খুঁজে দেখার দায়িত্ব দিয়ে বলে, ‘যাও! দেখো, কোথায় কী আছে।’ চোখ যখন সুন্দর কোনো দৃশ্যের খবর দেয়, হৃদয়ে তখন তা পাওয়ার জন্য ভালোবাসার শিহরণ এবং আকাঙ্ক্ষা জাগে। হৃদয় এবং চোখের এই অভ্যন্তরীণ দোলাচল উভয়কেই অনবরত ক্লান্ত করে থাকে। যেমনটি বলা হয়েছে :

চোখকে যেদিন দিশারী বানিয়ে করালে সন্ধান

তোমার চোখের লক্ষ্যবস্তু তোমায় করল হয়রান,

এমন কিছু দেখেলে যাতে ছিল না নিয়ন্ত্রণ,

আংশিকও নয়, নয় পুরোপুরিও;

বরং তোমার জন্য উত্তম ছিল ধৈর্যধারণ।

 কাজেই দৃষ্টিকে যখন কোনোকিছু দেখা এবং নিরীক্ষণ করা থেকে সংযত রাখা হয়, হৃদয়ও তখন নিরর্থক অনুসন্ধান আর কামনার মতো ক্লান্তিকর কাজ থেকে বিশ্রাম পায়।

যে ব্যক্তি নিজের দৃষ্টিকে অবাধে বিচরণের সুযোগ দেবেন, তিনি প্রতিনিয়ত নিজেকে অবিরাম ক্ষতি এবং নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার মাঝে আবিষ্কার করবেন। কারণ দৃষ্টিপাত থেকেই ভালোবাসার (মুহাব্বাহ্‌) জন্ম হয়, যার সূচনা হয় চোখ যা দেখেছে তার প্রতি মোহাবিষ্ট ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ার মাধ্যমে। এই ভালোবাসা ক্রমেই আকুল আকাঙ্ক্ষায় (সাবাবাহ্‌) পরিণত হয়, যার দ্বারা হৃদয় তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি অসংশোধনীয় মাত্রায় মোহাবিষ্ট এবং নির্ভরশীল হয়ে যায়। এর মাত্রা বেড়ে ‘আসক্তি’র (গারামাহ্‌) রূপ নেয়। এই আসক্তি এমন এক শক্তি যা আসক্ত ব্যক্তির পেছনে তেমনিভাবে লেগে থাকে, যেভাবে কোনো পাওয়াদার ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণীর পেছনে লেগে থাকে। এই আসক্তি আরও বাড়তে থাকে এবং ‘প্রেমাসক্তি’র (ইশ্‌ক) রূপ নেয় যা সকল প্রকার সীমা ছাড়িয়ে যায়। সবশেষে এর মাত্রা বেড়ে ‘প্রেমোন্মাদনা’র (শাগাফা) জন্ম হয় যা হৃদয়ের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশকেও বেষ্টন করে ফেলে। এই প্রেমোন্মাদনা ক্রমেই ‘আনুগত্যের ভালোবাসা’য় (তাতাইয়্যুমা) রূপ নেয়। তাতাইয়্যুমা’র অর্থই হলো ইবাদত। যখন বলা হয়, ‘তাইয়্যামা আল্লাহ্‌’, তখন তার অর্থ দাঁড়ায়, ‘সে আল্লাহ্‌র ইবাদত করেছে।’

 

এভাবেই হৃদয় এমন কিছুর উপাসনা করা শুরু করে, যার উপাসনা করা সমীচীন নয়। আর এসব কিছুর পেছনে একমাত্র কারণ একটি নিষিদ্ধ দৃষ্টিপাত। যে হৃদয় পূর্বে ছিল মনিব, তা এখন শিকলাবদ্ধ; যা ছিল মুক্ত ও স্বাধীন, তা এখন কারারুদ্ধ। এই হৃদয় চোখের দ্বারা নির্যাতিত এবং চোখের আছে অভিযোগ করলে, চোখ এখন বলে : ‘আমি তোমার দিশারী এবং আজ্ঞাবাহক। প্রথমে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছিলে।’ এখানে যাকিছু বলা হলো, তার সবই এমন সব হৃদয়ের জন্যই সত্য, যেসব হৃদয় আল্লাহ্‌র প্রতি ভালোবাসা ও একনিষ্ঠতাকে পরিত্যাগ করেছে। কারণ ভালোবাসার জন্য হৃদয়ের এমনকিছু চায়, যার প্রতি হৃদয় নিজেকে নিবেদিত রাখতে পারে। সে কারণেই, হৃদয় যখন শুধুমাত্র আল্লাহ্‌কে ভালোবাসে না এবং শুধু তাঁকেই উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করে না, তখন নিশ্চিতভাবে সে অন্যকিছুর উপাসনায় লিপ্ত থাকে। আল্লাহ্‌ ইউসুফ (আ) সম্পর্কে বলেন :

এভাবেই যাতে আমি তার থেকে অনিষ্ট অশ্লীলতা দুর করে দেই। নিশ্চয়ই সে আমার নিষ্ঠাবান বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত

(সূরা ইউসূফ; ১২ : ২৪)

আযীযের স্ত্রী একজন বিবাহতা নারী হওয়া সত্ত্বেও তার হৃদয়ে প্রেমাসক্তি প্রবেশ করেছিল। কারণ সে ছিল মুশরিকা। অন্যদিকে, ইউসুফ (আ) যুবক, অবিবাহিত এবং চাকর হওয়া সত্ত্বেও সেই অপকর্ম থেকে তাঁকে রক্ষা করা হয়েছিল। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহ্‌র একনিষ্ঠ গোলাম।

দ্বিতীয়ত : আলোকিত হৃদয়, স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি

ইবনু সুজা‘আ আল-কিরমানি বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিজের বাহ্যিক অবয়বকে সুন্নাহ্‌র আদলে এবং অভ্যন্তরীণ সত্ত্বাকে সর্বদা আল্লাহ্‌র চিন্তা-গবেষণা এবং তাঁর সচেতনতার আলোকে গড়ে তোলে, নিজের আত্মাকে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা থেকে এবং নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দৃষ্টিকে সংযত রাখে, সর্বদা হালাল রুজি ভক্ষণ করে, সেইব্যক্তির উপলব্ধি এবং অন্তর্দৃষ্টি কখনোই ভুল হবে না।”

আল্লাহ্‌ লূতের (আ) সম্প্রদায়কে কীভাবে শাস্তি দিয়েছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে বলেছেন :

“নিশ্চয়ই এতে ‘মুতাওয়াস্‌সিমীন’দের (স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন) জন্য রয়েছে নিদর্শনমালা

(সূরা আল হিজ্‌র; ১৫:৭৫)

মুতাওয়াস্‌সিমীন হলেন তারাই যারা স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন। তারা হারাম বস্তুর প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না এবং অশ্লীল কর্ম সম্পাদন করা থেকে বিরত থাকেন।

দৃষ্টি সংযত করা সম্পর্কিত আয়াতের পরবর্তী আয়াতেই আল্লাহ্‌ বলেছেন:

আল্লাহ্‌ আসমানসমুহ যমীনের নূ।…” (সূরা আন-নূর; ২৪:৩৫)

এর কারণ হলো, কর্ম যেমন, কর্মের প্রতিদানও তেমন হয়। অতএব, যে কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দৃষ্টিকে সংযত রাখবে, আল্লাহ্‌, আযযা ওয়া জাল্লা, সেইব্যক্তির জন্য নিষিদ্ধ বস্তুকে অনুরূপ অথচ তার চেয়ে অধিক উত্তম বস্তু দ্বারা প্রতিস্থাপন করবেন। তাই বান্দা যেহেতু তার চোখের আলোকে নিষিদ্ধ বস্তুর উপর পড়তে দেয়নি, আল্লাহ্‌ সেই বান্দার দৃষ্টি এবং অন্তরের আলোকে অনুগ্রহ দান করেন। ফলে ব্যক্তি সেইসব বিষয় বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন, দৃষ্টি সংযত না করলে যেগুলো বুঝা এবং উপলব্ধি করা তার জন্য সম্ভব হতো না।

ব্যক্তি নিজের মধ্যে এই বিষয়টি আক্ষরিক অর্থেই উপলব্ধি করতে পারেন। কারণ হৃদয় একটা আয়নার মতো এবং পাশবিক প্রবৃত্তিগুলো সেই আয়নার উপর মরিচার মতো। এই আয়না যখন সচ্ছ এবং পরিষ্কার থাকে, তখন তাতে বাস্তবতার (হাকাইক) আক্ষরিক প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু যদি তাতে মরিচা পড়ে থাকে, তাহলে তাতে সুষম প্রতিফলন তৈরি হয় না। ফলে হৃদয়ে অনুমান এবং সন্দেহ নির্ভর জ্ঞান ও অভিব্যক্তির উন্মেষ ঘটবে।

তৃতীয়ত : হৃদয় হবে শক্তিশালী, দৃঢ় এবং সাহসী

 

দৃষ্টির আলোর জন্য আল্লাহ্‌ যেভাবে চোখকে সুস্পষ্ট প্রমাণের সহায়ক শক্তি দিয়েছেন, হৃদয়ের দৃঢ়তার জন্যও তিনি হৃদয়কে সহায়ক শক্তি দান করবেন। এভাবে হৃদয়ে দুধরণের উপাদনের সমন্বয় ঘটবে। ফলে হৃদয় থেকে শয়তান বিতাড়িত হবে। হাদীসে উল্লেখ আছে, “কেউ যদি নিজের পাশবিক প্রবৃত্তির বিরোধিতা করে, ভয়ে শয়তান তার ছায়া থেকেও পালিয়ে বেড়ায়।”

একারণেই যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, সে নিজের মাঝে গ্লানিময় আত্মাকে খুঁজে পায় — যে আত্মা দুর্বল, শক্তিহীন, ঘৃণার যোগ্য। বস্তুত, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌কে মান্য করেন, আল্লাহ্‌ তার জন্য উচ্চমর্যাদা নির্ধারণ করেন। আর তাঁকে অমান্যকারীর জন্য আল্লাহ্‌ লাঞ্ছনা নির্ধারণ করেন:

“আর তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং দুঃখিত  হয়ো না, আর তোমরা বিজয়ী হবে, যদি মু’মিন হয়ে থাকো

(সূরা আল–ইমরান; ৩:১৩৯)

“কেউ যদি সম্মান চায় (তবে তা যেন আল্লাহ্‌র কাছেই চায়), কেননা সকল সম্মান আল্লাহ্‌রই।”

(সূরা ফাতির; ৩৫:১০)

অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র (আয্‌যা ওয়া জাল্লা) চেয়ে অবাধ্যতা এবং পাপকর্মকেই বেশি প্রাধান্য দেবে, আল্লাহ্‌ সেই বিরুদ্ধাচরণকারীকে লাঞ্ছিত করবেন। সালাফদের অনেকেই বলেছেন, “সম্মানের খোঁজে মানুষ রাজাদের দ্বারে যায়। অথচ আল্লাহ্‌র আনুগত্য ছাড়া কোনো সম্মান নেই।” কারণ যারা আল্লাহ্‌র আনুগত্য করে, তারা আল্লাহ্‌কে নিজেদের বন্ধু এবং রক্ষাকারী হিসেবে গ্রহণ করে। আর যারা আল্লাহ্‌কে তাদের রব এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গ্রহণ করে, আল্লাহ্‌ কখনোই তাদেরকে অসম্মানিত করেন না। একটি দো‘আ কুনূতে এ কথাগুলোই বলা হয়েছে: “যাকে আপনি বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন, সে অপমানিত হয় না আর যাকে আপনি শত্রু হিসেবে গ্রহণ করেন, সে সম্মানিত হয় না।”

(সূত্র : শায়েখ ইবনুল কায়্যিম, আল-মুন্‌তাকা মিন ইক্‌হাসাতুল লুফ্‌হান ফী মাসায়্যিদ আশ-শায়তান, পৃষ্ঠা ১০২-১০৫। পরিমার্জন : আলি হাসান।)

দাম্পত্য সম্পর্কের ৫০ টি বিষয় যা আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন

0
0

ভাষান্তর : শাহোরিনা ইয়াসমিন |  সম্পাদনা : আব্‌দ আল-আহাদ

Pics 4

১. সুন্দর সম্পর্ক নিজে থেকেই তৈরি হয় না, সেটি তৈরি করতে হয়। তাই আপনাকেও সেটি তৈরি করতে হবে।

২. কর্মক্ষেত্রেই যদি আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে   আপনার দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

৩. আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারে আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর জন্য খুব দামি একটি উপহার।

৪. কাউকে একইসাথে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা আপনার জন্য অসম্ভব নয়।

৫. আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর ব্যাপারে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া আপনার দাম্পত্য সম্পর্কে  বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

৬. দাম্পত্য জীবনে তা-ই নিয়ম যা দুইজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটে।

৭. সাময়িক ঝগড়া বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্য জীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়।

৮. দাম্পত্য সম্পর্ক, “কী পেলাম?” –এর হিসেবে মেলানোর জন্য নয়। বরং সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে “কী দিতে পেরেছি,” তা-ই দাম্পত্য সম্পর্কের মূলকথা।

৯. “জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আমি সর্বোত্তম”-এমনটি মনে হওয়া অতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। এমনটি মনে হলে নিজেকে যাচাই করুন।

১০. সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয় যে, দাম্পত্য জীবনও সুখের মধ্য দিয়ে কাটছে।

১১. যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, তাহলে সেই বিশ্বাস জোড়া দেওয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ই উপযুক্ত সময়।

১২. অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয় থাকে না।

১৩. ভালোবাসা কেবল অনুভুতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

১৪. বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশা ও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়।

১৫. দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।

১৬. জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর প্রতি আপনার গভীর মনোযোগ পরস্পরের জন্য হতে পারে অমূল্য উপহার।

১৭. অনেক সময় সুখী দম্পতিরাও ভাবেন যে, তারা ভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছেন।

১৮. আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী আপনাকে সুখী করার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও তিনি আপনার সুখী হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য করতে পারেন।

১৯. মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলার জন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যা বলা বর্জন করুন।

২০. আপনার মতামত যে সবসময় সঠিক, এমনটি ভাববেন না।

২১. বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

২২. সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকে দীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান, তা কখনোই পাবেন না।

২৩. আপনার বন্ধুদেরকে অবহেলা করবেন না।

২৪. আপনার যদি মনে হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষটি, যাকে আমি বিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন।

২৫. কোনোকিছু প্রমাণ করতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনি অনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।

২৬. আত্মিক উদারতা একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রধান ভিত্তি।

২৭. সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি কোনো রক্ষণাত্মক আচরণ করে, তাহলে তার রক্ষণাত্মক হওয়ার পক্ষে আপনিও কিছু কারন দেখাতে পারেন।

২৮. বিয়ে কোন ৫০/৫০ সম্ভাবনা না; বরং এটি হলো ১০০/১০০।

২৯. দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনি কোনোকিছু এখনও পরিশোধ করতে পারেন আবার পরেও পারেন। তবে যতদেরিতে তা করবেন, ততবেশি জরিমানা আপনাকে দিতে হতে পারে।

৩০. সুন্দর বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা প্রয়োজন। এমনটি করতে পারলে, আপনি আপনার ত্যাগের চেয়ে ভোগই বেশি করতে পারবেন।

৩১. ক্ষমা কোন সাময়িক গুণ নয়; বরং ক্ষমা একটি চলমান প্রক্রিয়ার নাম।

৩২. দাম্পত্য জীবনের কঠিন সময়গুলো আপনাকে একজন ভালো মানুষ করে তুলবে।

৩৩. বিয়ে অনেকটা রকেট উৎক্ষেপণের মতো। যখন তাতে মাধ্যাকর্ষণ টান পূর্ণ থাকে, তখন ফ্লাইট চলতে খুব সামান্য জ্বালানীর প্রয়োজন হয়।

৩৪. দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।

৩৫. আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতা বোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না।

৩৬. বাস্তবতার খাতিরে মাঝে মাঝে নীরবতা পালন করা একটি অসাধারন উপায়।

৩৭. আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছে আপনার সর্বোত্তম প্রশ্নগুলোর একটি হতে পারে, “আমি কীভাবে তোমাকে আরও বেশি ভালোবাসতে পারি?

৩৮. চাইলেই দাম্পত্য জীবনকে চিরসবুজ করে রাখা যায়।

৩৯. যৌক্তিক অনুমানের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে অনুমানকে যাচাই করে নেওয়াই আবশ্যক।

৪০. মনের ইচ্ছা বা উদ্দেশ্যই সবকিছু নয়, কিন্তু তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি।

৪১. সার্থক যৌন সম্পর্ক সার্থক দাম্পত্য সম্পর্কের নিশ্চয়তা দেয় না। তবে তা সার্থক দাম্পত্য সম্পর্ক নির্মাণে সহায়তা করে।

৪২. ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করলে তা দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতি করবে না। তবে সন্দেহজনক বিষয় নিয়ে লুকোচুরি করলে তা দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতি করবে।

৪৩. সঙ্গী/সঙ্গিনীকে আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা এবং ঈর্ষাপরায়ণতার জন্ম হয় ভয় থেকে, ভালোবাসা থেকে নয়।

৪৪. বিশ্বাসযোগ্যতা বিশ্বাসযোগ্যতার জন্ম দেয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার অভ্যাস গড়ে তোলে।

৪৫. আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি কোনোকিছুকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, তাহলে তা আপানর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৪৬. দাম্পত্য সম্পর্কে প্রেমাবেগের প্রয়োজন কখনোই ফুরিয়ে যায় না।

৪৭. নতুন সম্পর্কের ঔজ্জ্বল্য সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে।

৪৮. নীরবতাও আক্রমণাত্মক হতে পারে যখন তা অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

৪৯. অধিক উত্তম হলো নিজে কীভাবে সঠিক কাজটি করতে পারেন সেদিনে মনোযোগ দেওয়া। তারপর আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী কী ভুল করেছে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া।

৫০. দাম্পত্য সম্পর্ককে মানিয়ে নেওয়া একেবারেই অসম্ভব মনে হলে, কেবল তখনই বিচ্ছেদের দিকে পা বাড়াতে পারেন।

Source: Excerpted from Al Maghrib Institute’s “Fiqh of Love” seminar with Shaykh Waleed Basyouni.

English Version

 Exclusive post for Pure Matrimony Bangladesh

শুধুমাত্র বাস্তব জীবনে ইসলাম চর্চাকারী অবিবাহিত মুসলিম ছেলেমেয়েদেরকে আল্লাহ্‌ভীরু জীবন সঙ্গী/সঙ্গিনী খুঁজে পেতে সহায়তা করাই “পিওর ম্যাট্রিমনি” ওয়েবসাইটের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন  – http://www.quraneralo.com/purematrimony/

Facebook: http://www.facebook.com/purematrimonybd

হালাল উপার্জন

0
0
  সানাউল্লাহ নজির আহমদ সম্পাদনা : ড. আবু বকর মো. যাকারিয়া ভূমিকা : রিযক অর্থাৎ পার্থিব সহায় সম্বল ও সচ্ছলতা এ জগতের এক অপরিহার্য বস্তু ও বিষয়। এ রিযক ব্যতীত পার্থিব জীবন অচল, অস্পূর্ণ বরং অসম্ভব। কম বেশী সবারই রিযক প্রয়োজন। সবাই এ রিযক অন্বেষণ করে। কেউ বৈধ পন্থায় কেউ বৈধ-অবৈধ উভয় পন্থায়ই রিযকের পিছনে দৌড়ে। […]

জান্নাতের অধিবাসীঃ বারাকাহ

0
0
ENGLISH VERSION | অনুবাদঃ মুনিমুল হক ঠিক কত বছর বয়সে দাস হিসেবে বিক্রির জন্য আবীসিনিয়া থেকে মক্কায় আনা হয়েছিল তাকে তা আমাদের জানা নেই।  জানা নেই কে তার মা, কে তার বাবা, বা কি তার  বংশ পরিচয়। সেই সময়  তার মত অনেককেই  বিভিন্ন জায়গা থকে ধরে আনা হত দাস দাসী হিসেবে মক্কার বাজারে বিক্রির জন্য। […]

পর্নোগ্রাফী দেখলে মস্তিষ্ক যেভাবে বদলে যায়

0
0
মূল : মোহাম্মাদ গিলান, ইউনিভার্সিটি অব ভিক্টোরিয়া, স্নায়ুবিজ্ঞান | ভাষান্তর ও সম্পাদনা : আব্‌দ আল-আহাদ স্নায়ুবিজ্ঞান (Neuroscience) এখন স্বীকার করে যে, মানুষের মস্তিষ্ক অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন। অর্থাৎ, অভিজ্ঞতা লাভের মধ্যদিয়ে মস্তিষ্কে পরিবর্তন ঘটে এবং আমরা যা দেখি, শুনি বা জানি, তার সবকিছুর সাথেই মস্তিষ্কের সংযোগ গড়ে ওঠে। দর্শন ক্লাসের আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে নতুন […]

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বিষয়াবলী

0
0
প্রশ্ন: ইহরাম অবস্থায় মুহরিমকে কোন কোন বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে? উত্তর:আলহামদুলিল্লাহ। ইহরামের নিষিদ্ধ বিষয়াবলী: ইহরামের কারণে ব্যক্তিকে যে বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। যেমন: ১. মাথার চুল মুণ্ডন করা। দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুণ্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবানীর পশু যথাস্থানে পৌঁছে যাবে।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬] আলেমগণ মাথার […]

সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী আল্লাহ্‌

0
0
ভাষান্তর : মোঃ মাহমুদ ইবনে গাফফার সম্পাদনা : আব্‌দ আল-আহাদ ওয়েব সম্পাদনা : মোঃ মাহমুদ ইবনে গাফফার কোরআন আল-কারীমে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “বস্তুত তোমরা এমন বিষয়কে অপছন্দ করছো যা তোমাদের পক্ষে বাস্তবিকই মঙ্গলজনক। পক্ষান্তরে, তোমরা এমন বিষয়কে পছন্দ করছো যা তোমাদের জন্য বাস্তবিকই অনিষ্টকর এবং আল্লাহ্‌ই অবগত আছেন আর তোমরা অবগত নও।” [সূরা […]

আল্লাহর শপথ আমি নামাজ পড়তাম

0
0
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, দুটি নিয়ামত এমন আছে, যে দুটোতে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হল সুস্থতা আর অবসর। (সহীহ বুখারী ৫৯৭০, ইফা) এটি একটি সচিত্র সত্যি ঘটনা যা আপনার জীবন, আপনার চিন্তা ধারা ও জীবনের উদ্দেশ্য বদলে দিতে পারে। ঘটনাটি বাহরাইনের ইব্রাহিম নাসের নামের এক যুবকের। সে জন্মগতভাবেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত, শুধু তার আঙ্গুল ও মাথা নাড়াতে সক্ষম। […]

করুন কিংবা না করুন!!

0
0
অনুবাদ: আব্দুর রাকীব (মাদানী) | সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী   বিসমিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম। আমি এবং আপনি .. তিনি এবং সে .. অমুক এবং তমুক .. আমরা প্রত্যেকে এই জীবনে কিছু না কিছু করি …. হতে পারে আপনি এখন রুজি-রোজগারের তল্লাশে ব্যস্ত আছেন। কিংবা খাওয়ার টেবিলে রুচিসম্পন্ন খাদ্য ভক্ষণ করছেন। কিংবা নরম বিছানায় মধুর ঘুমে আচ্ছন্ন আছেন। কিংবা […]

জিলহজের প্রথম দশদিনের ফযীলত এবং ঈদ ও কুরবানীর বিধান

0
0
জিলহজের প্রথম দশদিনের ফযীলত এবং ঈদ ও কুরবানীর বিধান লেখকঃ আব্দুল মালেক আল-কাসেম । অনুবাদ : সানাউল্লাহ নজির আহমদ জিলহজ মাসের দশদিনের ফযীলত : আল্লাহ তা‌’আলার অশেষ মেহেরবানী যে, তিনি নেককার বান্দাদের জন্য এমন কিছু মৌসুম করে দিয়েছেন, যেখানে তারা প্রচুর নেক আমল করার সুযোগ পায়, যা তাদের দীর্ঘ জীবনে বারবার আসে আর যায়। এসব […]

কুরবানী করার পদ্ধতি

0
0
(ক) উট দাঁড়ানো অবস্থায় এর ‘হলক্বূম’ বা কণ্ঠনালীর গোড়ায় কুরবানীর নিয়তে ‘বিসমিল্লা-হি আল্লাহু আকবার’ বলে অস্ত্রাঘাতের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত করে ‘নহর’ করতে হয় এবং গরু বা ছাগলের মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে ফেলে ‘যবহ’ করতে হয়।[13] কুরবানী দাতা ধারালো ছুরি নিয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে দো‘আ পড়ে নিজ হাতে খুব জলদি যবহের কাজ সমাধা করবেন, যেন […]

বছরের শ্রেষ্ঠ ১০ দিনে করণীয় ১০ আমল

0
0
লেখক : আলী হাসান তৈয়ব | সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া আল্লাহ তা‘আলা দয়ালু। তাই তিনি আপন বান্দাদের তওবার সুযোগ দিতে ভালোবাসেন। তিনি চান বান্দারা ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য লাভ করুক। এ উদ্দেশ্যে তিনি আমাদের জন্য বছরে কিছু বরকতময় ও কল্যাণবাহী দিন রেখেছেন- যাতে আমলের সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। আমরা পরীক্ষার দিনগুলোতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাই সবচে […]

আপনার সন্তানকে অভিশাপ দেবেন না

0
0
মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। আমাদের পাড়ার আব্দুল্লাহর মা পানিতে ডুবে মরা কিশোর সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে পাগলপারা হয়ে কাঁদছেন। মায়ের বাঁধভাঙ্গা কান্না আর বিলাপ শুনে উপস্থিত কারো পক্ষেই চোখের পানি সংবরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি কাঁদছেন আর বিলাপ করে বলছেন, ‘ও বাবুর আব্বু তুমি আমাকে মেরে ফেল। আমিই তোমার সন্তানকে হত্যা করেছি। গতকালই ওর জ্বালা […]

এসো জান্নাতের পথে – পর্ব ১

0
0
সংকলন: জাকের উল্লাহ আবুল খায়ের | সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين، نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক সমস্ত নবী ও রাসূলদের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং […]

মানুষের পাপ গোপন রাখার গুরুত্ব

0
0

 সম্পাদনাঃআবদ্‌ আল-আহাদ এবং শাবাব শাহরিয়ার খান | অনুবাদঃ মুনিমুল হক “যারা পছন্দ করে যে,ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক,নিঃসন্দেহে ইহাকাল ও পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ্ জানেন,তোমরা জানো না”। [সূরা আন-নূর; ২৪:১৯] প্রিয় নবী (সা:) আমাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই শিক্ষা দিয়েছেন যার একটি হল অন্যের পাপ গোপন রাখা। আমাদের মাঝে কেউ যদি এমন কোন খারাপ […]

The post মানুষের পাপ গোপন রাখার গুরুত্ব appeared first on QuranerAlo.com - কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট.

লাইলাতুল কাদর- রমাদানের উপহার

0
0

সোর্স: তাফসীর ইবনে কাসীর, অষ্টাদশ খণ্ড বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সূরা কাদর ১. নিশ্চয়ই আমি এটা অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে; ২. তুমি কি জান সেই মহিমান্বিত রজনীটি কি ? ৩. মহিমান্বিত রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। ৪. ঐ রাত্রিতে ফেরেশতাগণ ও (তাদের সর্দার) ‘রুহ’ অবতীর্ণ হর প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের       অনুমতিক্রমে। ৫. শান্তিই শান্তি, সেই রজনী ঊষার অভ্যুদয় […]

The post লাইলাতুল কাদর- রমাদানের উপহার appeared first on QuranerAlo.com - কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট.

মুসলিম উম্মাহর সংশোধনের গুরুত্ব ও পদ্ধতি

0
0

লেখক: জাকের উল্লাহ আবুল খায়ের ইসলামী শরীয়তের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, ভালো কাজের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা এবং খারাপ ও মন্দ কাজের পরিণতি হতে তাদের হেফাজত করা। মানুষ যাতে কোন খারাপ কাজে লিপ্ত না হয় তার জন্য তাদের সতর্ক ও সংশোধন করা। এ কারণেই মানুষের কাজের হিসাব নেয়া ও তা পর্যালোচনার গুরুত্ব অপরিসীম। ভালো কাজের আদেশ […]

The post মুসলিম উম্মাহর সংশোধনের গুরুত্ব ও পদ্ধতি appeared first on QuranerAlo.com - কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট.

‘লাইলাতুল্ কদর’এ কি কি ইবাদত করবেন?

0
0

লেখক: শাইখ আব্দুর রকীব মাদানী আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস্ স্বালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ, অনেক দ্বীনী ভাই আছেন যারা সহীহ নিয়মে লাইলাতুল কদরে ইবাদত করতে ইচ্ছুক। তাই তারা প্রশ্ন করে থাকেন যে, লাইলাতুল কদরে আমরা কি কি ইবাদত করতে পারি? এই রকম ভাই এবং সকল মুসলিম ভাইদের জ্ঞাতার্থে সংক্ষিপ্তাকারে কিছু উল্লেখ করা হল। [ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা […]

The post ‘লাইলাতুল্ কদর’এ কি কি ইবাদত করবেন? appeared first on QuranerAlo.com - কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট.

Viewing all 385 articles
Browse latest View live